Skip to main content

Featured Post

BBQ Grill 24-inch Outdoor Picnic Patio Cooking Backyard Party

অবিশ্বাসের ভেলায় চরে

মধ্য বয়স্ক আসাদ, চোখে কালো ফ্রেমে বাধা চশমা, গায়ে পাঞ্জাবী, হাতে চায়ের কাপ।
বসে আছে ঘরের বেলকোনিতে। ১৭,১৮ বছরের একটা মেয়ে আসাদের। আসাদ যখন পত্রিকায় গভীর মনোযোগে নিমজ্জিত "বাবা তোমার চিঠি "___ বলে মেয়ে আফরিন তার দৃষ্টি কাড়ে।
:: চিঠি???
:: জ্বী বাবা। ডাকপিয়ন ৩দিন আগে দিয়ে গেছে।তুমি বাড়ি ছিলে না বলে দিতে পারিনি।
:: কে লিখেছে?
:: নূপুর নামক কোন এক ভদ্র মহিলা।
নূপুর নামটা শুনে আসাদ চশমা টা খুলে টেবিলে রাখতে রাখতে বলে,
:: তোর মা দেখেনি তো???
:: না বাবা। তবে আমি দেখেছি।
::তুই???
:: হুম।আসলে চিঠিটা ৩দিন আগে এলেও ২০০১ সালে লিখা হয়েছে। বুঝতে পেরেছো বাবা আমার জন্ম সালে।
ভদ্র মহিলা বোধহয় তোমার প্রেমিকা ছিল বাবা।
আসাদ মাথা নিচু করে অপরাধীর মত বসে আছে। মেয়ে হয়ে বাবার প্রেমের গল্প শোনা টা খুব বেশি বেমানান বৈকি। আফরিন বাবার কাঁদে হাত দিয়ে বললো, বাবা ভালবাসা দোষের কিছু নয়।তুমি বলবে আমায় কিভাবে কি হলো? প্রমিজ মা জানতে পারবে না। আসাদ জানে আফরিন সে রকম মেয়ে নয়।সম্পর্ক বাবা মেয়ে হলেও একে অন্যের খুব ভাল বন্ধু। "আচ্ছা বলব,তার আগে এক কাপ কড়া করে চা নিয়ে আয় দেখি.... আসাদ প্রফুল্ল মন নিয়ে বলতেই মেয়ে "এই যাব আর আসব" বলে চলে যায়। আসাদ বুক পকেটে চিঠিটা রেখে বারান্দায় খাচায় বন্ধী আফিরিনের টিয়ে পাখিটার দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে কিছু বললেও তা খুব বেশি দূর পৌঁছাতে পারেনা। আফরিন চা নিয়ে আসলে আসাদ খেতে খেতে বলতে শুরু করে।আর আফরিন টিয়ে পাখিটার খাঁচার কাছে গিয়ে অধীর আগ্রহ নিয়ে শোনার জন্য দাঁডিয়ে থাকে।

আমি তখন ম্যাচে থেকে ভার্সিটিতে পড়ি।
আশরাফ নামক একটা ছেলে আমার খুব ক্লোজ
হয়ে ওঠে। ম্যাচের সেই একঘেঁয়েমি
জীবনটা কে কিছুটা মুক্তি দিতে আমরা দুজনে
প্রায়শই এখানে ওখানে ঘুরে বেড়াতাম।। পাঁচ টাকার
বুট কিনে শার্ট এর বুক পকেটে রেখে দুজনে
রাজধানীর এ গলি থেকে ও গলিতে ঘুরে
বেড়াতাম। ভার্সিটি তে ক্যান্টিনে বসে সবাই যখন
গার্ল ফ্রেন্ড নিয়ে আড্ডা জমাতো আমি আর
আশরাফ তখন বইয়ের পাতায় মুখ গুঁজে নিজেদের
বুঝাতে চেয়েছি মধ্যবৃত্তদের প্রেম করতে
নেই । কিন্তু এই theory বেশি দিন ধরে রাখতে
পারিনি। আমি আর আশরাফ যেখানে বসে আড্ডা
দিতাম,দেখি সেখানে একটা মেয়ে বসে
ফোনে কথা বলছে। মাথায় রক্ত উঠে যায়। আমি
আর আশরাফ গিয়ে বলি,
:: এই যে এখানে বসেছেন কেন?
মেয়েটা কান থেকে ফোনটা নামিয়ে এদিক
ওদিক তাকিয়ে যখন কাউকে দেখতে পেলো
না তখন প্রশ্নবাচক চোখে আমার দিকে বোকার
মত তাকাতেই আমি বললাম,জ্বী ম্যাম আপনাকেই
বলছি।এটা আমাদের জায়গা এখানে বসা নিষেধ।
মেয়েটা ওঠে ভাল করে সিটেরর দিকে
তাকিয়ে আবার তাতে বসে পরলে আমি নিজেই
অবাক হই।
:: এটা কি হলো?
:: দেখলাম কারো নাম লেখা আছে কিনা।তা
দেখলাম নেই।
:: তার মানে আপনি উঠবেন না???
:: এখনো বুঝতে পারছেন না???
:: খুব খারাপ হচ্ছে কিন্তু ...... আশরাফ আর এগুতে
দেয় না আমাকে।হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়।
যেতে যেতে বলি, দেখে নিবো.....
..
এইটুকু বলে আসাদ থেমে যায়।অধির আগ্রহ
নিয়ে আফরিন বলে, তারপর কি বাবা? "তারপর একদিন
বাসে করে ফার্মগেট থেকে আগারগাও যাচ্ছি।
বাসে অনেক লোক দাঁডিয়ে আছে। সেই
বাসে একজন মধ্যবয়সী লোকও ছিল।তার
পক্ষে দাঁডিয়ে থাকা কষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু কেউই
নিজ সিট ত্যাগ করতে নারাজ। দাঁডিয়ে থাকা
লোকের মাঝে উক্ত মেয়েটিও যে ছিল
জানতাম না।যখন মেয়েটি আমার নাম ধরে বললো,
এইই আসাদ তুমি উঠে কাকুকে বসতে দাও
তো.... তখন অবাক হয়ে যাই। এই মেয়ে আমার
নাম জানলো কি করে? আমি যখন উঠছিলাম না
মেয়েটি আমার হাত ধরে টেনে তুলে। ভার্সিটির
খারাপ ব্যবহারের শোধ নিলো না তো??? গাড়ি
যখন আগারগাঁও থামে কাকু আমার হাত ধরে
বলে,বেঁচে থাকো বাবা,এমন ছেলে যেন
ঘরে ঘরে জন্মায়। যে মেয়েটার প্রতি
এতক্ষণ রাগে গাঁ কিটকিট করছিল কৃতজ্ঞতায় তার
প্রতি চোখ ছলছল করেছিল। কিছু বলার আগেই
মেয়েটি গাড়ি থেকে নেমে যায়। খুঁজে পাইনি
তাকে।
..
সেদিন আমি আর আশরাফ বুদ্ধি করলাম সেচ্ছায় রক্ত দান কেন্দ্রে গিয়ে ভাল ভাল খাবার খেয়ে চলে আসব,রক্ত দিবো না। যে কথা সেই কাজ।আমি আশরাফ রক্তদান কেন্দ্রে ওয়েটিং রুমে বসে শুকনা রুটি আর কলা গিলছি আর এদিক ওদিক তাকাচ্ছি পালানোর জন্য।কিন্তু কথায় বলে না যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয়। দেখি সেই মেয়েটি দাঁডিয়ে আছে,আমি রুটির টুকরোটা গিলতেই পারছিলাম না,বোধহয় পানি হলে ভাল হতো। ,
:: এই নিন পানি (মেয়েটি)
আমি ঢকঢক করে গিলে,
:: আপনি বুঝলেন কিভাবে???
:: বুঝে নিতে হয়।খাওয়া শেষ?
:: হুম।
:: রক্তের গ্রুপ ও +?
:: হুম.... (ভয়ে ভয়ে)
:: চলেন আমার সাথে....
:: কই??????
:: আপনাকে এই যে রুটি কলা দিয়ে জামাই আদর করা হচ্ছে কিসের জন্য জানেন না???? চলুন আমার সাথে.... বলতে বলতে আমাকে টেনে নিয়ে যায়। আশরাফ কেও অন্য একটা মেয়ে নিয়ে যায়।
আমি রক্ত দিয়ে বেডে শুয়ে আছি, মেয়েটি আমার পাশে এসে বসলো। একাই বলতে লাগলো, যাকে রক্ত দিলেন তিনি একজন মা। ডেলিভারিরর জন্য রক্ত প্রয়োজন ছিল তিন ব্যাগের। আপনি এক ব্যাগ দিলেন আর দুই ব্যাগ আমি দিয়েছি। আপনি হয়তো আমার প্রতি রেগে আছেন, তিন মাস পর দেখা করবেন আমার শরীর থেকে আপনাকে এক ব্যাগ দিয়ে দিবো।
:: এই দেখেন মিস, আমি রক্ত দিতেই এসেছি।
:: তাহলে পালাতে চাচ্ছিলেন কেন???
:: কই না তো,আমি ওয়েটিং রুম টা ভাল করে দেখছিলাম।
মেয়েটি এক গাল হেসে, হয়েছে বাবা থাক।। এখানে কিছু ফলমূল আছে খেয়ে নিবেন। বলেই মেয়েটি উঠতে গিয়েই আবার বসে পরে,কপালে একটু হাত দিয়ে আনমনে হয়ে যায়। ব্যাপারটা অস্বাভাবিক, আচ্ছা কি হলো আপনার??
::ও কিছু না,ডাক্তার এক ব্যাগ রক্ত দিতে বলেছিল, দুই ব্যাগ দেওয়াতে ক্লান্তি লাগছে।
:: বাসা কই?
:: ফার্মগেট ..
::আমিও ওখানে থাকি,চলেন এগিয়ে দিয়ে আসি।
:: নাহ আমি একাই পারব....
:: হ্যাঁ আমি জানি আপনি একাই পারবেন। যে মেয়ে ডাকাতের মত দুইটা ছেলে কে তাড়া করতে পারে....
::এই আপনি কিন্তু...
আর বলতে দেইনা।হাত ধরে নিয়ে রিকসায় উঠি। আচ্ছা আমার নাম জানলেন কিভাবে??
:: সেদিন আপনার বন্ধু আপনার নাম ধরেই তো ডাকছিল...
এ কথা সে কথা বলতে বলতে দুজনে এক সময় খুব কাছে এসে যাই। ফোনে কথা হতো আমাদের।দেখা হতো, সিনেমা দেখা হতো। এভাবে আমার জীবন থেকে আশরাফ হারিয়ে যায়,দখল করে নেয় ও।

আমাদের ভালবাসাটা গভীর থেকে গভীরতর হয়ে ওঠে। এক সময় দুজন বিয়ে করতে চাই। আর এ জন্যই দুজনেই দুজনের গ্রামের বাড়ি যাই। আমি বাড়ি গিয়ে সবাইকে নূপুরের কথা বলি,বাবা রাজিও হয়ে যায়। কিন্তু নূপুর.... নূপুরকে আমি আর ফোনে পাইনি, রাতের পর রাত,দিনের পর দিন কল দিয়েছি নাম্বার বন্ধ পেয়েছি। আমি ওর গ্রামের বাড়ি চিনতাম না। ফার্মগেট এ গিয়ে জানতে পারি ও সেখানেও আর আসেনি। অনেক ভালবাসতাম ওকে।কিন্তু প্রতিদানে ও কি দিল আমায় বল? স্বপ্ন ভাঙা প্রহর,একাকী রাজপথে ঘুরার আনন্দ,ছিন্নভিন্ন গোধূলি বেলা...
ও আসলে আমাকে নিয়ে খেলেছে,আমাকে ঠকিয়েছে।এই পর্যন্ত বলে আসাদ আর বলতে পারে না।হাউমাউ করে কেঁদে উঠে। অদূরে দাঁড়িয়ে থাকা আফরিনও অঝোর ধারায় অশ্রুপাত করে। নিজেকে সামলে নিয়ে আফরিন বাবাকে বলে, বাবা নূপুর আন্টি মোটেও প্রতারক নয়।চিঠিটা তোমার পড়া উচিত। তবে এখন পড়েই বা কি হবে। বরং আরো বেশি কষ্ট পাবে। তবুও পড়ে দেখো, তাহলে আন্টির প্রতি ঘৃণা টা আর থাকবে না। বলেই আফরিন ভেজা ভেজা চোখ টা হাতের উল্টো পাশ দিয়ে মুছতে মুছতে সেখান থেকে প্রস্থান করে।
আসাদ মেয়ের কথা শুনে কান্না থামিয়ে বুক পকেট থেকে চিঠিটা বেড় করে পড়তে লাগে...
"
"প্রিয় আসাদ,
তুমি কেমন আছো? নিশ্চয় খুব ভাল।ভাল থাকবেই না কেন, বিয়ে করেছো,শুনলাম মেয়েও হয়েছে নাকি। মেয়েটার নাম আফরিনই তো রেখেছো নাকি অন্য কিছু? মনে পরে কি,আমাদের প্রথম সন্তান আমরা মেয়ে চেয়েছিলাম, তার নাম আফরিন রাখতে চেয়েছিলাম।
তুমি কি আমার প্রথম চিঠি পাওনি আসাদ? না পাওয়ার তো কথা নয়।কিন্তু কোন রিপ্লে দিলে না যে। একবার দেখতেও তো আসতে পারতে। বাড়ি ফেরার পথে accident এ পা দুটি হারিয়ে বড় অসহায় হয়ে গেছিলাম। বারবার শুধু তোমাকে দেখতে চেয়েছি। ভেবেছি তুমি এসে বলবে, পা হারিয়েছো তাতে কি,আমার পা দুটি তো আছে।তোমাকে নিয়ে চলার মত সামর্থ্য আছে আমার।নাহ তুমি আসোনি,তুমি বলোনি।
আচ্ছা তুমি ভাবলে কি করে আমার এই অন্ধকার জীবনে তোমাকে চাইবো?
তুমি বিয়ে করেছো, ঘর করছো এতে আমি সত্যিই অনেক খুশি।
আমি তোমাকে ভালবেসেছি, তোমাতে আছি। তোমার স্মৃতি বুকে জড়িয়ে বাকিটা পথ আমি একাই চলতে পারব।
তুমি সুখি হও,তুমি ভাল থাকো।
দূর থেকে এইটুকু চাই,।অবুঝ মন যখনি তোমায় চাইবে,মন কে সান্ত্বনা দিয়ে
মেনে নিবো এই সত্য,
" যতবার আলো জ্বালাতে চাই,
নিভে যায় বারে বারে,
আমার জীবনে তোমার আসন
গভীর অন্ধকারে। "
....
ইতি,
নূপুর
....
চিঠিটা পড়ার পর আসাদ বাকরুদ্ধ হয়ে যায়।নিজের অপরাধ বোধ যেন কুড়ে কুড়ে খায়। নিস্তব্ধ হয়ে আসে আশপাশ টা, টিয়ে পাখিটাও নিরব হয়ে চেয়ে থাকে আকাশ পানে।

Comments

Popular posts from this blog

MXZ Desktop Home & Office PC,Basic Gaming Desktop PC Computer

MXZ Desktop Home & Office PC, Athlon 3000G 3.5GHz, 8GB DDR4, M2 480GB SSD,5 RGB Fans, WiFi& Win 10 Pro 64-bit, Basic Gaming Desktop PC Computer Ready to use(3000G) Save30% FREE Shipping & FREE Returns the item for any reason in new and unused condition: Product Link   buy now: Operating System Windows 10 Pro CPU ModelRyzen 3 Brand MXZ CPU Manufacturer AMD Hard Disk Description SSD Hard Disk Interface PCIE x 4 CPU Speed 3.6 GHz About this item CLICK HERE: AMD Athlon 3000G 3.5GHz with A320 Motherboard HDMI Ports Ethernet port + WiFi 5x USB3.1 and 4x USB2.0 400W Power supply RGB Fans Tempered Glass Side panel RAM 8GB DDR4 2666 WINDOWS 10 Pro Ready for Gaming! This APU is perfect for a home office. APU combines CPU and GPU into a single chip, so no graphics card is required.  System: Athlon 3000G 3.5GHz Vega 3 Graphics| Operating System: Genuine Windows 10 pro 64-bit (installed and activated). Motherboard: A320| RAM: 8GB DDR4 2666| Hard Drive: M2 480G Solid State Drive|1x HDMI

Gamehag - Conjure up rewards by playing games!

Play games and earn attractive rewards, invite your friends to play with, and explore the enchanted world of witches! FOR FREE  DOWNLOAD CLICK HERE #https gamehag com games" #gamehag free games" #gamehag robux" #gamehag chests" #gamehag article" #gamehag google chrome" #gamehag mod apk unlimited gems" #gamehag facebook" #gamehag code" #gamehag minigames" #gamehag forum" #gamehag war thunder" #how to get robux in gamehag" #gamehag comn" #gamehag soul gems generator" #gamehag mod apk" #gamehag codes"

Solar Power Bank,Solar Charger,42800mAh Power Bank

Today You Save 40%- $35.99 9    Product Link buy now: Solar Power Bank,Solar Charger,42800mAh Power Bank,Portable Charger,External Battery Pack 5V3.1A Qc 3.0 Fast Charging Built-in Super Bright Flashlight(Orange) About this item Color Black/Orange Brand Mregb Connector Type Usb Voltage 5 Volts (AC) Item Dimensions LxWxH 7.48 x 3.94 x 1.02 inches        Power bank has a large battery capacity of 42800mAh , and uses high-density batteries to load a larger capacity without changing the volume and weight. The super battery life allows you to get rid of the anxiety and worries about the depletion of the device power anytime and anywhere.       Solar power bank uses strong professional ABS material , Chemical resistant, heat-resistant, and has super surface hardness, high elasticity and toughness. IP67 waterproof,drop-proof and dust-proof, so you no longer worry about damage caused by water/drop, it can work in extreme environments. With more than 1600+ charging life cycles, it is very reli